চীনকে টেক্কা দিয়ে রুশ তেল কিনছে ভারত, বড় পতন ওপেক থেকে আমদানি

একসময় তেল উৎপাদনকারীদের জোট ওপেকের সদস্যদেশগুলো থেকে ভারত সিংহভাগ জ্বালানি তেল আমদানি করত। সেই হার ছিল মোট আমদানির ৭২ শতাংশ। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসেই বিষয়টা এ রকমই ছিল।

কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে শুরু করে। রাশিয়ার কাছ থেকে ভর্তুকি মূল্যে জ্বালানি তেল আমদানির সুযোগ ভারত ভালোভাবেই কাজে লাগায়। ফলে, এক বছরের মধ্যেই ওপেকের কাছ থেকে তেল আমদানির পরিমাণ ৭২ থেকে ৪৬ শতাংশে নেমে আসে।

ইকোনমিক টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে, গত মার্চ মাসে ইরাক ও সৌদি আরব থেকে ভারত যে পরিমাণ তেল আমদানি করছে, তার চেয়ে বেশি আমদানি করছে রাশিয়া থেকে। অথচ একসময় ওপেকের সদস্যদেশগুলো থেকে ভারত আমদানি করত ৯০ শতাংশ তেল।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে রাশিয়া থেকে আসত ভারতের মোট আমদানির মাত্র ১ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এসে তা উঠেছে ৩৬ শতাংশে। ভারতের দৈনিক তেল আমদানির পরিমাণ ৪৬ লাখ ব্যারেল। এপ্রিল মাসে দেশটি রাশিয়ার কাছ থেকে আমদানি করেছে দিনে ১৬ লাখ ব্যারেল আর ওপেকের সদস্যদেশগুলো থেকে করেছে ২১ লাখ ব্যারেল।

বিভিন্ন সূত্রের বরাতে ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, মার্চ মাসে ভারত ইরাকের কাছ থেকে তেল কিনেছে দৈনিক আট লাখ ব্যারেল। তবে এ সময় রাশিয়ার কাছ থেকে কিনেছে এর দ্বিগুণ। ২০১৭-১৮ সাল থেকে ভারতের সবচেয়ে বড় জ্বালানি উৎস ছিল ইরাক। তৃতীয় স্থানে ছিল সৌদি আরব, সেখান থেকে ভারত কিনেছে দৈনিক ৬ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল তেল।

গত বছরের ডিসেম্বর ও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানির প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ২৯ ও ২৬ শতাংশ। এরপর গত মার্চে সেই প্রবৃদ্ধির হার নেমে আসে ১ দশমিক ৮ ও এপ্রিল মাসে তা আবার কিছুটা বেড়ে ৪ শতাংশে উঠেছে।

রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানির প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার কারণ হলো বাজারে চীনের আবির্ভাব। বিশেষ করে উরাল তেলের প্রতি ভারত ও চীনের আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি। কারণ, এই তেল জি-৭-এর বেঁধে দেওয়া দর ৬০ ডলারের চেয়ে কম দামে বিক্রি হয়। এ ছাড়া এই তেলে সালফারের উপস্থিতি কম।

সারা বিশ্বে তেলবাহী কার্গোর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে ভরটেক্সা। সেই ভরটেক্সার বিশ্লেষক সেরেনা হুয়াং বলেছেন, ‘এই উরাল তেল নিয়ে চীনের আগ্রহ থাকায় রাশিয়া থেকে ভারতের জ্বালানি আমদানিতে কিছুটা ভাটা পড়বে।’

তবে কম দামে তেল আমদানি করায় ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোর মতো বিদেশি মুদ্রার সংকটে পড়েনি এবং মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে।  দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ভালো অবস্থানে আছে এবং তাদের সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে জিজ্ঞাসা করা হয়, ভারত কেন পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা ভেঙে রাশিয়ার তেল কিনছে? জবাবে তিনি যেসব উত্তর দিয়েছেন, তার সবই নেটিজেনদের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে।

যেমন এস জয়শঙ্কর বলেছেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউরোপ রাশিয়ার তেল কিনেছে ভারতের চেয়ে ছয় গুণ, তাহলে ভারত কেন কিনবে না? আবার তিনি বলেছেন, যাদের মাথাপিছু আয় ৫০ হাজার ডলার, তারাও জনগণের কথা চিন্তা করে রাশিয়ার তেল কিনছে; অথচ ভারতের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ডলারের ওপরে, তাহলে ভারত কেন জনগণের কথা ভাববে না?

তবে জয়শঙ্করের সবচেয়ে সাহসী উত্তর হচ্ছে, ইউরোপ কেন মনে করে, তার সমস্যা অন্যদেরও সমস্যা হবে? অর্থাৎ এ যুদ্ধ রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপ-আমেরিকার সমস্যাপ্রসূত, এর সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নেই।

একসময় তেল উৎপাদনকারীদের জোট ওপেকের সদস্যদেশগুলো থেকে ভারত সিংহভাগ জ্বালানি তেল আমদানি করত। সেই হার ছিল মোট আমদানির ৭২ শতাংশ। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসেই বিষয়টা এ রকমই ছিল।

কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে শুরু করে। রাশিয়ার কাছ থেকে ভর্তুকি মূল্যে জ্বালানি তেল আমদানির সুযোগ ভারত ভালোভাবেই কাজে লাগায়। ফলে, এক বছরের মধ্যেই ওপেকের কাছ থেকে তেল আমদানির পরিমাণ ৭২ থেকে ৪৬ শতাংশে নেমে আসে।

ইকোনমিক টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে, গত মার্চ মাসে ইরাক ও সৌদি আরব থেকে ভারত যে পরিমাণ তেল আমদানি করছে, তার চেয়ে বেশি আমদানি করছে রাশিয়া থেকে। অথচ একসময় ওপেকের সদস্যদেশগুলো থেকে ভারত আমদানি করত ৯০ শতাংশ তেল।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে রাশিয়া থেকে আসত ভারতের মোট আমদানির মাত্র ১ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এসে তা উঠেছে ৩৬ শতাংশে। ভারতের দৈনিক তেল আমদানির পরিমাণ ৪৬ লাখ ব্যারেল। এপ্রিল মাসে দেশটি রাশিয়ার কাছ থেকে আমদানি করেছে দিনে ১৬ লাখ ব্যারেল আর ওপেকের সদস্যদেশগুলো থেকে করেছে ২১ লাখ ব্যারেল।

বিভিন্ন সূত্রের বরাতে ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, মার্চ মাসে ভারত ইরাকের কাছ থেকে তেল কিনেছে দৈনিক আট লাখ ব্যারেল। তবে এ সময় রাশিয়ার কাছ থেকে কিনেছে এর দ্বিগুণ। ২০১৭-১৮ সাল থেকে ভারতের সবচেয়ে বড় জ্বালানি উৎস ছিল ইরাক। তৃতীয় স্থানে ছিল সৌদি আরব, সেখান থেকে ভারত কিনেছে দৈনিক ৬ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল তেল।

গত বছরের ডিসেম্বর ও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানির প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ২৯ ও ২৬ শতাংশ। এরপর গত মার্চে সেই প্রবৃদ্ধির হার নেমে আসে ১ দশমিক ৮ ও এপ্রিল মাসে তা আবার কিছুটা বেড়ে ৪ শতাংশে উঠেছে।

রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানির প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার কারণ হলো বাজারে চীনের আবির্ভাব। বিশেষ করে উরাল তেলের প্রতি ভারত ও চীনের আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি। কারণ, এই তেল জি-৭-এর বেঁধে দেওয়া দর ৬০ ডলারের চেয়ে কম দামে বিক্রি হয়। এ ছাড়া এই তেলে সালফারের উপস্থিতি কম।

সারা বিশ্বে তেলবাহী কার্গোর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে ভরটেক্সা। সেই ভরটেক্সার বিশ্লেষক সেরেনা হুয়াং বলেছেন, ‘এই উরাল তেল নিয়ে চীনের আগ্রহ থাকায় রাশিয়া থেকে ভারতের জ্বালানি আমদানিতে কিছুটা ভাটা পড়বে।’

তবে কম দামে তেল আমদানি করায় ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোর মতো বিদেশি মুদ্রার সংকটে পড়েনি এবং মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে।  দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ভালো অবস্থানে আছে এবং তাদের সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে জিজ্ঞাসা করা হয়, ভারত কেন পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা ভেঙে রাশিয়ার তেল কিনছে? জবাবে তিনি যেসব উত্তর দিয়েছেন, তার সবই নেটিজেনদের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে।

যেমন এস জয়শঙ্কর বলেছেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউরোপ রাশিয়ার তেল কিনেছে ভারতের চেয়ে ছয় গুণ, তাহলে ভারত কেন কিনবে না? আবার তিনি বলেছেন, যাদের মাথাপিছু আয় ৫০ হাজার ডলার, তারাও জনগণের কথা চিন্তা করে রাশিয়ার তেল কিনছে; অথচ ভারতের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ডলারের ওপরে, তাহলে ভারত কেন জনগণের কথা ভাববে না?

তবে জয়শঙ্করের সবচেয়ে সাহসী উত্তর হচ্ছে, ইউরোপ কেন মনে করে, তার সমস্যা অন্যদেরও সমস্যা হবে? অর্থাৎ এ যুদ্ধ রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপ-আমেরিকার সমস্যাপ্রসূত, এর সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নেই।

লেখক থেকে আরো

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Advertismentspot_img

সাম্প্রতিক সংবাদ

আরও কত বছর চাপে থাকবে বাংলাদেশের অর্থনীতি?

বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও এক বছর চাপে থাকবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন জিডিপি কমে ৪ শতাংশ হবে। তবে...

ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে কেন?

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, টাকার মান কমে যাওয়ার পেছেনে বেশ কিছু...

প্যারিসে গাড়ির প্রদর্শনীতে চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির আধিপত্য

চীনা পণ্য আমদানিকে নিরুৎসাহিত করতে বরাবরই শুল্ক আরোপের চর্চা অব্যাহত রেখেছে পশ্চিমা বিশ্ব। এই ধারাবাহিকতায় চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানিতে আগামী পাঁচ বছরে শুল্ক ১০...

সর্বশেষ খবরের সাথে আপ টু ডেট থাকতে চান?

আমরা আপনার কাছ থেকে শুনতে চাই! আপনার বিবরণ পূরণ করুন এবং আমরা আমাদের সকল আপডেট আপনাকে জানাবো।