গার্মেন্টস মালিকেরা করোনার সময় সরকারঘোষিত প্রণোদনা তহবিল থেকে যে অর্থ ঋণ নিয়েছিলেন- তা ফেরত দিতে আরও সময় চেয়েছেন। প্রণোদনার ঋণ ফেরত দিতে বারবার সময় চাচ্ছেন তারা।
সর্বশেষ গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ। ওই চিঠিতে ঋণের বাকি ১৪ কিস্তি দিতে ৪২ মাস সময় চেয়েছেন নিট পোশাকশিল্পের মালিকেরা।
বিকেএমইএ’র চিঠিতে ঋণ পরিশোধে বাড়তি সময়ের পাশাপাশি আরও বেশকিছু দাবিও জানানো হয়। এ ছাড়া নিট কারখানার জন্য রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে সর্বোচ্চ ৩ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছে বিকেএমইএ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ইডিএফ থেকে ঋণের অর্থ পরিশোধে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সব ধরনের কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের দেওয়ার ঋণ সীমা (ব্যাক টু ব্যাক ক্রেডিট লিমিট) ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধির করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ারও অনুরোধ করা হয় ওই চিঠিতে।
করোনাকালের প্রথম ঢেউয়ের সময় প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা করে সরকার। সেই তহবিল থেকে ঋণ নেন তারা। সেই ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময় আসার পরই মালিকেরা সরকারের কাছে সময় চান। সরকারও তাদেরকে সময় দেয়। সেই সময় শেষে মালিকেরা ঋণ পরিশোধ শুরু করলেও পোশাকশিল্প মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারা আবার সরকারের কাছে ঋণ পরিশোধের সময় বাড়ানোর আবেদন জানান।
সর্বশেষ গত সপ্তাহে বিকেএমইএ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে দেওয়া চিঠিতে ঋণ পরিশোধের আরও সময় চেয়ে ও বেশকিছু দাবি জানিয়ে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্রয়াদেশ পেতে শুরু করে কারখানাগুলো। কিন্তু উদ্যোক্তারা পোশাক তৈরির জন্য তুলা, সুতা, কাপড়, রাসায়নিকসহ অন্যান্য কাঁচামাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে মারাত্মক সমস্যায় পড়ছেন। আন্তর্জাতিকভাবে কনটেইনারের সংকট ও আকাশচুম্বী ভাড়া, সুতার দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়া, চীনে বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে কাঁচামালের ঊর্ধ্বগতি ইত্যাদি কারণে তৈরি পোশাকের উৎপাদন খরচ বহু গুণে বেড়ে গেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরে নিট পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। এই প্রবৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রেখেছে পণ্যের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, সংকটকালেও তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা লোকসান দিয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ফলে বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে রপ্তানি আদেশ আগের তুলনায় বেড়েছে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী জাহাজ ও কনটেইনার সংকটের কারণে রপ্তানি পণ্য সময়মতো জাহাজীকরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এখনো ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করে রপ্তানি আদেশ বাতিল বা স্থগিত করছে। ক্ষেত্রবিশেষে মূল্যছাড় দেওয়াসহ নানা শর্ত আরোপ করছে।