বাংলাদেশ উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং নেক্সট ইলেভেন অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ রোল মডেলের ভূমিকা পালন করে আসছে। একইসাথে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে যে কয়েকটি দেশ অর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অনবদ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকগুলোতে প্রতিবেশী দেশগুলোকে পেছনে ফেলে সামনের সারিতে বাংলাদেশ। বর্তমান বিশ্বের অনেক স্বল্পোন্নত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আদর্শ হিসেবে দেখা হচ্ছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতির আকার, ও বিভিন্ন খাতে যেমন কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্য যা কিনা টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বৈদেশিক রেমিট্যান্স কাজ করছে এবং আয়ের বাহ্যিক উৎস হিসাবে বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্স জিডিপি এবং অর্থপ্রদানের ভারসাম্যে যথেষ্ট অবদান রাখছে। বৈদেশিক মুদ্রার এই প্রবাহ শুধুমাত্র দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে স্থিতিশীল করে না বরং জ্বালানি খরচ এবং বিনিয়োগকেও উৎসাহিত করে, যার ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, এশিয়া মহাদেশে রেমিটেন্স আহরণে প্রথমে আছে ভারত, এরপর পাকিস্তান, তৃতীয় বাংলাদেশ, চতুর্থ নেপাল এবং পঞ্চম অবস্থানে আছে শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক রেমিট্যান্স এত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার একটি প্রাথমিক কারণ হল দারিদ্র্য বিমোচনে এর প্রভাব। এর জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নিম্ন আয়ের কাজকর্মের উপর নির্ভর করে, বিশেষ করে কৃষি খাতে বা ডে-লেবার, রেমিট্যান্স অনেক পরিবারের জন্য একটি জীবনরেখা হিসাবে কাজ করে, তাদের দারিদ্র্য থেকে বের করে আনে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে। এই বৈদেশিক রেমিট্যান্স স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং আবাসনের মতো প্রয়োজনীয় চাহিদাগুলির মেটাতে সহায়ক, যার ফলে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের মধ্যে ব্যবধান পূরণে বৈদেশিক রেমিটেন্স একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে, যেখানে অভ্যন্তরীণ সঞ্চয়ের হার প্রায়ই অবকাঠামো উন্নয়ন এবং শিল্প সম্প্রসারণের জন্য বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য অপর্যাপ্ত, রেমিট্যান্স প্রবাহ বিনিয়োগের মূলধনের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস প্রদান করে। এর ফলে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে সুবিধা হয়, উদ্যোক্তাকে উৎসাহিত করে এবং অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত অক্টোবর-২০২৩ এর পর থেকে দেশের রেমিটেন্স প্রবাহ পরবর্তী মাসগুলোতে একটানা বেড়েছে। প্রবাসীরা গত অক্টোবর-২০২৩ প্রায় ২১৭ দশমিক ৮২ বিলিয়ন টাকা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে, যা গত মাসের থেকে ৭১ দশমিক ০৮ বিলিয়ন টাকা বেশি। এর পরবর্তী মাসে (নভেম্বর) রেমিট্যান্স প্রবাহ সামান্য কিছুটা কমে হয় ২১৪ বিলিয়ন টাকা এবং গত ডিসেম্বর মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে দাড়াই ২১৯ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন টাকা। নতুন বছরে প্রথম মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ আরও বৃদ্ধি পেয়ে হয় ২৩১ দশমিক ১০ বিলিয়ন টাকা যা গত ডিসেম্বর মাসের থেকে ১১ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন টাকা বেশি।
বিশ্বব্যাংকের ব্যাংকের ২০২৩ এর রেমিটেন্স সংক্রান্ত তথ্য বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার রেমিটেন্স আহরণে শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে সবার উপরে রয়েছে ভারত। ২০২২ সালে ভারতের প্রবাসী আয় ১১১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। যা বিশ্বের মোট রেমিটেন্সের ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। ভারতের জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ৬ নম্বরে। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবাসী আয়ে পাকিস্তানের জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এদিকে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ যা জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ৪ নম্বরে।
বৈদেশিক রেমিট্যান্স দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রেখে, সঞ্চয়-বিনিয়োগের ব্যবধান পূরণ, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কার্যকরভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে, বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই অর্থনীতি নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে
টেকসই অর্থনীতি বিনির্মাণে প্রবাসী আয় কতটা জরুরী…?
বাংলাদেশ উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং নেক্সট ইলেভেন অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ রোল মডেলের ভূমিকা পালন করে আসছে। একইসাথে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে যে কয়েকটি দেশ অর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অনবদ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকগুলোতে প্রতিবেশী দেশগুলোকে পেছনে ফেলে সামনের সারিতে বাংলাদেশ। বর্তমান বিশ্বের অনেক স্বল্পোন্নত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আদর্শ হিসেবে দেখা হচ্ছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতির আকার, ও বিভিন্ন খাতে যেমন কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্য যা কিনা টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বৈদেশিক রেমিট্যান্স কাজ করছে এবং আয়ের বাহ্যিক উৎস হিসাবে বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্স জিডিপি এবং অর্থপ্রদানের ভারসাম্যে যথেষ্ট অবদান রাখছে। বৈদেশিক মুদ্রার এই প্রবাহ শুধুমাত্র দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে স্থিতিশীল করে না বরং জ্বালানি খরচ এবং বিনিয়োগকেও উৎসাহিত করে, যার ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, এশিয়া মহাদেশে রেমিটেন্স আহরণে প্রথমে আছে ভারত, এরপর পাকিস্তান, তৃতীয় বাংলাদেশ, চতুর্থ নেপাল এবং পঞ্চম অবস্থানে আছে শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক রেমিট্যান্স এত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার একটি প্রাথমিক কারণ হল দারিদ্র্য বিমোচনে এর প্রভাব। এর জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নিম্ন আয়ের কাজকর্মের উপর নির্ভর করে, বিশেষ করে কৃষি খাতে বা ডে-লেবার, রেমিট্যান্স অনেক পরিবারের জন্য একটি জীবনরেখা হিসাবে কাজ করে, তাদের দারিদ্র্য থেকে বের করে আনে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে। এই বৈদেশিক রেমিট্যান্স স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং আবাসনের মতো প্রয়োজনীয় চাহিদাগুলির মেটাতে সহায়ক, যার ফলে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের মধ্যে ব্যবধান পূরণে বৈদেশিক রেমিটেন্স একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে, যেখানে অভ্যন্তরীণ সঞ্চয়ের হার প্রায়ই অবকাঠামো উন্নয়ন এবং শিল্প সম্প্রসারণের জন্য বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য অপর্যাপ্ত, রেমিট্যান্স প্রবাহ বিনিয়োগের মূলধনের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস প্রদান করে। এর ফলে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে সুবিধা হয়, উদ্যোক্তাকে উৎসাহিত করে এবং অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত অক্টোবর-২০২৩ এর পর থেকে দেশের রেমিটেন্স প্রবাহ পরবর্তী মাসগুলোতে একটানা বেড়েছে। প্রবাসীরা গত অক্টোবর-২০২৩ প্রায় ২১৭ দশমিক ৮২ বিলিয়ন টাকা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে, যা গত মাসের থেকে ৭১ দশমিক ০৮ বিলিয়ন টাকা বেশি। এর পরবর্তী মাসে (নভেম্বর) রেমিট্যান্স প্রবাহ সামান্য কিছুটা কমে হয় ২১৪ বিলিয়ন টাকা এবং গত ডিসেম্বর মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে দাড়াই ২১৯ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন টাকা। নতুন বছরে প্রথম মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ আরও বৃদ্ধি পেয়ে হয় ২৩১ দশমিক ১০ বিলিয়ন টাকা যা গত ডিসেম্বর মাসের থেকে ১১ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন টাকা বেশি।
বিশ্বব্যাংকের ব্যাংকের ২০২৩ এর রেমিটেন্স সংক্রান্ত তথ্য বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার রেমিটেন্স আহরণে শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে সবার উপরে রয়েছে ভারত। ২০২২ সালে ভারতের প্রবাসী আয় ১১১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। যা বিশ্বের মোট রেমিটেন্সের ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। ভারতের জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ৬ নম্বরে। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবাসী আয়ে পাকিস্তানের জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এদিকে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ যা জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ৪ নম্বরে।
বৈদেশিক রেমিট্যান্স দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রেখে, সঞ্চয়-বিনিয়োগের ব্যবধান পূরণ, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কার্যকরভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে, বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই অর্থনীতি নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে