পোশাক শিল্পে অস্থিরতার জন্য তিন কারণ চিহ্নিত

ক্ষমতার পালা বদলের পর দেশের তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিক অসন্তোষ তীব্র আকার ধারণ করার পেছনে বকেয়া বেতনের সঙ্গে আরও দুটি বিষয় আলোচনায় আসছে। একটি হলো ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, অন্যটি বিদেশি শক্তির ইন্ধন।
এ ছাড়া রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে কিছু কারখানা মালিকের অনুপস্থিতিও শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে বলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা মনে করছেন।
পোশাক শিল্পের এ অস্থিরতায় ইতোমধ্যে ১০-১৫ শতাংশ সম্ভাব্য ক্রয়াদেশ বাতিল হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শ্রম উপদেষ্টা। কয়েকটি দেশ এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ক্রেতাগোষ্ঠীকে টানার চেষ্টা করছে।
‘বিদেশি শক্তির’ ইন্ধনের বিষয়ে গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানোর কথা জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে শিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকায় দুষ্কৃতকারীরা সুযোগ নিচ্ছে; শ্রমিক সেজে হামলা করছে।
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন শ্রেণি-গোষ্ঠী নানা দাবিতে মাঠে নেমেছে। পোশাক ও ওষুধ শিল্পের শ্রমিকরাও ১০ দিনের বেশি সময় ধরে নানা দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে।
পোশাক শ্রমিকদের দাবিগুলো সুনির্দিষ্ট নয়। একেক কারখানায় একেক ধরনের দাবি উঠছে। সরকারের তরফে শুরুতে উসকানি ও ষড়যন্ত্রের কথা বলা হয়, যৌথ অভিযানও শুরু হয়।
তবে এভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়নি। প্রতিদিনই বহু কারখানা বন্ধ থাকছে।৭৫ শতাংশ কারখানার বেতন পরিশোধ ছাঁটাই বন্ধ, হাজিরা বোনাস চালু, নতুন শ্রমিক নিয়োগের দাবি নিয়ে শুরু হওয়া শ্রমিক আন্দোলন তীব্র হয়েছে আগস্ট মাসের বেতন, নিয়মিত টিফিন বিল দেওয়ার দাবিতে।
শ্রমিকদের পুরানো দাবি পূরণ আলোচনার ভিত্তিতে হবে- মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএ নেতাদের এমন কথায় শ্রমিকরা কাজে ফিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধে বিলম্ব ও ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফের উত্তপ্ত হয়েছে পোশাক শ্রমঘন এলাকা গাজীপুর ও সাভারের কারখানাগুলো।
বেতন সমস্যা কাটাতে জুলাই আন্দোলনে কারফিউ থাকায় উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়ে আগস্টের বেতন দিতে ‘সফট’ ঋণ চেয়েছিলেন তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা।
সরকারও সেই দাবি পূরণ করে ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় ৭৫ শতাংশ কারখানায় বেতন পরিশোধের কথা জানিয়েছে তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ।
দেশের রপ্তানি আয়ের ৮৩ শতাংশের যোগানদতা এবং ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের এ খাতের আড়াই হাজার কারখানা বিজিএমইএর সদস্য। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ নিটওয়্যার ও সোয়েটার এবং বাকি ৬০ শতাংশই ওভেন খাতের।
অন্যদিকে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেছেন, বৃহস্পতিবার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে ৮৬টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে ১৩৩টি কারখানায়। বেতন বকেয়া থাকায় শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করেন শিল্প পুলিশ প্রধান কার্যালয়ের ডিআইজি সিবগাত উল্লাহ বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে সব কাজ করছে। এখানে সেনাবাহিনীও আছে, আমরা পুরো এলাকা টহলের আওতায় রেখেছি। সমস্যা হচ্ছে বেতন নিয়ে।
শ্রমিকনেতারা বলছেন, কিছু কারখানায় শ্রমিকদের সঙ্গে দাবি নিয়ে আলোচনা করছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া বিভিন্ন কারখানার মূল ফটকে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া সংক্রান্ত নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়ায় কাজে ফিরেছেন শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন বলেন, শনিবার সকালে বন্ধ থাকা অধিকাংশ পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। অনেক কারখানার সামনে শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি মেনে নিয়ে সে অনুযায়ী মালিকপক্ষ নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে। দুই-একটি কারখানার শ্রমিকেরা তাদের দাবি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছেন। যেসব কারখানা বন্ধ আছে, সেগুলোর মালিকপক্ষ আন্তরিক হলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব।

ক্ষমতার পালা বদলের পর দেশের তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিক অসন্তোষ তীব্র আকার ধারণ করার পেছনে বকেয়া বেতনের সঙ্গে আরও দুটি বিষয় আলোচনায় আসছে। একটি হলো ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, অন্যটি বিদেশি শক্তির ইন্ধন।
এ ছাড়া রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে কিছু কারখানা মালিকের অনুপস্থিতিও শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে বলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা মনে করছেন।
পোশাক শিল্পের এ অস্থিরতায় ইতোমধ্যে ১০-১৫ শতাংশ সম্ভাব্য ক্রয়াদেশ বাতিল হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শ্রম উপদেষ্টা। কয়েকটি দেশ এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ক্রেতাগোষ্ঠীকে টানার চেষ্টা করছে।
‘বিদেশি শক্তির’ ইন্ধনের বিষয়ে গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানোর কথা জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে শিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকায় দুষ্কৃতকারীরা সুযোগ নিচ্ছে; শ্রমিক সেজে হামলা করছে।
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন শ্রেণি-গোষ্ঠী নানা দাবিতে মাঠে নেমেছে। পোশাক ও ওষুধ শিল্পের শ্রমিকরাও ১০ দিনের বেশি সময় ধরে নানা দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে।
পোশাক শ্রমিকদের দাবিগুলো সুনির্দিষ্ট নয়। একেক কারখানায় একেক ধরনের দাবি উঠছে। সরকারের তরফে শুরুতে উসকানি ও ষড়যন্ত্রের কথা বলা হয়, যৌথ অভিযানও শুরু হয়।
তবে এভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়নি। প্রতিদিনই বহু কারখানা বন্ধ থাকছে।৭৫ শতাংশ কারখানার বেতন পরিশোধ ছাঁটাই বন্ধ, হাজিরা বোনাস চালু, নতুন শ্রমিক নিয়োগের দাবি নিয়ে শুরু হওয়া শ্রমিক আন্দোলন তীব্র হয়েছে আগস্ট মাসের বেতন, নিয়মিত টিফিন বিল দেওয়ার দাবিতে।
শ্রমিকদের পুরানো দাবি পূরণ আলোচনার ভিত্তিতে হবে- মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএ নেতাদের এমন কথায় শ্রমিকরা কাজে ফিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধে বিলম্ব ও ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফের উত্তপ্ত হয়েছে পোশাক শ্রমঘন এলাকা গাজীপুর ও সাভারের কারখানাগুলো।
বেতন সমস্যা কাটাতে জুলাই আন্দোলনে কারফিউ থাকায় উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়ে আগস্টের বেতন দিতে ‘সফট’ ঋণ চেয়েছিলেন তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা।
সরকারও সেই দাবি পূরণ করে ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় ৭৫ শতাংশ কারখানায় বেতন পরিশোধের কথা জানিয়েছে তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ।
দেশের রপ্তানি আয়ের ৮৩ শতাংশের যোগানদতা এবং ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের এ খাতের আড়াই হাজার কারখানা বিজিএমইএর সদস্য। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ নিটওয়্যার ও সোয়েটার এবং বাকি ৬০ শতাংশই ওভেন খাতের।
অন্যদিকে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেছেন, বৃহস্পতিবার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে ৮৬টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে ১৩৩টি কারখানায়। বেতন বকেয়া থাকায় শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করেন শিল্প পুলিশ প্রধান কার্যালয়ের ডিআইজি সিবগাত উল্লাহ বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে সব কাজ করছে। এখানে সেনাবাহিনীও আছে, আমরা পুরো এলাকা টহলের আওতায় রেখেছি। সমস্যা হচ্ছে বেতন নিয়ে।
শ্রমিকনেতারা বলছেন, কিছু কারখানায় শ্রমিকদের সঙ্গে দাবি নিয়ে আলোচনা করছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া বিভিন্ন কারখানার মূল ফটকে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া সংক্রান্ত নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়ায় কাজে ফিরেছেন শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন বলেন, শনিবার সকালে বন্ধ থাকা অধিকাংশ পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। অনেক কারখানার সামনে শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি মেনে নিয়ে সে অনুযায়ী মালিকপক্ষ নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে। দুই-একটি কারখানার শ্রমিকেরা তাদের দাবি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছেন। যেসব কারখানা বন্ধ আছে, সেগুলোর মালিকপক্ষ আন্তরিক হলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব।

লেখক থেকে আরো

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Advertismentspot_img

সাম্প্রতিক সংবাদ

আরও কত বছর চাপে থাকবে বাংলাদেশের অর্থনীতি?

বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও এক বছর চাপে থাকবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন জিডিপি কমে ৪ শতাংশ হবে। তবে...

ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে কেন?

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, টাকার মান কমে যাওয়ার পেছেনে বেশ কিছু...

প্যারিসে গাড়ির প্রদর্শনীতে চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির আধিপত্য

চীনা পণ্য আমদানিকে নিরুৎসাহিত করতে বরাবরই শুল্ক আরোপের চর্চা অব্যাহত রেখেছে পশ্চিমা বিশ্ব। এই ধারাবাহিকতায় চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানিতে আগামী পাঁচ বছরে শুল্ক ১০...

সর্বশেষ খবরের সাথে আপ টু ডেট থাকতে চান?

আমরা আপনার কাছ থেকে শুনতে চাই! আপনার বিবরণ পূরণ করুন এবং আমরা আমাদের সকল আপডেট আপনাকে জানাবো।