বাংলাদেশ কি চীনের ঋণের ফাঁদে পা দিচ্ছে ?

গত ২০ আগস্ট অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছিলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের কাছে চীনের চার বিলিয়ন ডলার পাওনা আছে। আর বিভিন্ন প্রকল্পে বাংলাদেশকে আরও ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। অর্থাত, বাংলাদেশে চীনা ঋণের পরিমাণ বাড়ছে দিন দিন। বাংলাদেশকে ঋণ দেয়, এমন ৩২টি দেশ ও সংস্থার মধ্যে চীন এখন চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
চীনের ওপরে আছে বিশ্বব্যাংক, জাপান ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক- এডিবি। আর বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থাগুলো থেকে প্রতিবছর মোট যে পরিমাণ ঋণ নেয়, তার প্রায় ১০ শতাংশই দেয় চীন। এমনকি, দেশটি টানা দুই বছর বাংলাদেশকে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার বা তার চেয়ে বেশি পরিমাণে ঋণ দিয়েছে।
এখন পর্যন্ত চীনের কাছ থেকে বাংলাদেশ যত ঋণ দিয়েছে, তার মধ্যে গত চার বছরেই নিয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি ডলার। এই অর্থ চীনের দেওয়া মোট ঋণের ৪০ শতাংশের মতো। যদিও চীনা ঋণের সুদের হার অন্যান্য দেশ ও সংস্থাগুলোর দেয়া ঋণের সুদের হারের প্রায় সমান। তারপরও চীনের কাছ থেকে প্রতিবছর নেয়া ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। অবশ্য দু’দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যও বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত।
চীনের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়লেও তা অনেকটা একতরফা ভাবেই বলা যায়। কারণ চীন থেকে বাংলাদেশের আমদানি বাড়ছে প্রতিবছরই। সেই তুলনায় বাড়ছে না রপ্তানি। ফলে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েই চলছে।
আর গত এক দশকে এই বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি। বাংলাদেশের মোট আমদানির ২৬ শতাংশই আসি চীন থেকে। যদিও মোট রপ্তানির মাত্র ১২২ শতাংশ যায় দেশটিতে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ইপিবির পরিসংখ্যানে দেখা যায়। ২০১২-১৩ অর্থবছরে চীন থেকে ৬৩২ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করা হয়েছিল। বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৪৬ কোটি ডলারের পণ্য। অর্থাৎ মানিক্য ঘাটতি ৫৮৫ কোটি ডলার।
এর এক দশক পর ২০২১-২২ অর্থবছরে, চীন থেকে আমদানি করা হয়েছে ১৯৩৫ কোটি ডলারের পণ্য। অথচ এই সময়ে দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়ার পণ্যের অর্থ মূল্য ছিল মাত্র ৬৮ কোটি ডলার। সর্বশেষ ২০২২ ২৩ অর্থবছরে চীন থেকে আমদানি কিছুটা বেড়েছে। পণ্য আমদানি হয়েছে ১,৯৮১ কোটি ডলারের। তবে রপ্তানি ছিল সেই ৬৮ কোটি ডলার।

এই হিসেবে চীনের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ১৯০০ কোটি ডলারের বেশি। অর্থাৎ এক দশকে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে, সয়াবিন তেল ও পামওয়েল, গম, প্রকৌশল যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ, তুলা, ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ, বোনা কাপড়, কৃত্রিম তন্তু ইত্যাদি।

বাংলাদেশের পোশাক তরে বেশিরভাগ কাঁচামালও আসে চীন থেকে। আর বাংলাদেশ থেকে চিনে রপ্তানি হওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে, ওভেন পোশাক, নিট ওয়ার, চামড়া ও চামড়া জাত পণ্য জুতা ইত্যাদি। বলা যায় এককভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এখন চীন। শুধু তাই না, বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার বাড়ার সাথে-সাথে, চীন থেকে আমদানির পরিমাণও বাড়তে থাকবে। কারণ যেসব পণ্য বাংলাদেশ রপ্তানি করছে, সেগুলোর যন্ত্রাংশ, কেমিক্যাল থেকে শুরু করে, প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানি করতে হচ্ছে চীন থেকে।

এমনকি যেসব পণ্য নতুন করে রপ্তানির তালিকায় যুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে। সেগুলোর কাঁচামাল বা যন্ত্রাংশের জন্য চীনের মুখাপেক্ষী হতে হবে। ফলে বলা যায় বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশে চীনের কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশের প্রধান খাত গুলোকে তাদের প্রয়োজনে আমদানি করতে হয় চীন থেকে। যে কারণে এটা বলার প্রয়োজন রাখে না যে। বাংলাদেশের অর্থনীতি যত বড় হবে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ততো বাড়তে থাকবে।

এদিকে ২০১৫ সালে চীন কয়েকটি স্বল্পনাতো দেশে। তাদের পণ্যের ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত বাণিজ্য সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। ২০২০ সালের জুলাই থেকে চারিফ লাইনের আওতায় ৯৭ শতাংশ বাংলাদেশী পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চালু করে। ফলে ওই বছর চীনে ৮৫৪৭টি পণ্য সুবিধায় রপ্তানির সুযোগ পায় বাংলাদেশ। আর ২০২২ সালেই চিন তার বাজারে, বাংলাদেশকে ৯৯ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়। যদিও এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে চীনের বাজারে রপ্তানি বাড়াতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ।।

এদিকে ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশ স্বল্পোনত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নত হলে। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানির সময় শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। চিনও এর ব্যতিক্রম নয়।।

তবে ২০২৬ সালের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশ বের হওয়ার আগেই। চীনের সাথে এফটিএ বা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে। এই চুক্তি হলে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে, বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
২০১৮ সালে বাংলাদেশে ১ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছিল। চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে। কিন্তু ২০১৯ সালেই তা কমে যায়। ওই বছর বিনিয়োগ আসে ৬২৬ মিলিয়ন ডলার।

করোনা মহামারীর সময় অর্থাৎ ২০২০ সালেই তা আরো কমে মাত্র ৫১ মিলিয়ন ডলারের নেমে আসে। অবশ্য ২০২১ সালে এই অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। ওই বছর চীন থেকে বিনিয়োগ আসে ৪০৮ মিলিয়ন ডলার। পরবর্তী বছরগুলোতে, বিনিয়োগের পরিমাণ আরো বাড়ার আশা করা হলেও, ২০২২ সালে চীনা বিনিয়োগ কমে ১৮৭ মিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ কিছুটা বেরে ২৬০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী। স্বাধীনতার পর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত। দেশের বিভিন্ন খাতে ঋণ ও অনুদান হিসেবে মোট ১ হাজার ৭৭ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল চীন। তবে এর মধ্যে অনুদান হিসেবে এসেছে খুব সামান্যই। সিংহভাগই দেয়া হয়েছে ঋণ হিসেবে।

বাংলাদেশে গত এক দশক ধরে, বড়-বড় বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে দেখা গেছে। কোন প্রকল্পের বাস্তবায়ন শেষ কোনটা শেষের পথে। এমন কিছু প্রকল্প হলো পদ্মা সেতু, পদ্মা রেল, কর্ণফুলী টানেল, চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেললাইন, পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পদ্মা পানি শোধনাগার প্রকল্প, তথ্যপ্রযুক্তি অবঘন ও ডিজিটাল সরকার প্রকল্প ইত্যাদি। এসব প্রকল্পের অনেকগুলোর সাথে রয়েছে চীনের গভীর সম্পৃক্ততা। বিদ্যুৎ, জ্বালানি সহ দেশের বিভিন্ন খাতে। সরকারি, বেসরকারিভাবে বাস্তবায়নাধীন। এমন আরো বেশ কিছু মেগা প্রকল্পে এখন বিনিয়োগ রয়েছে চীনের। পদ্মা সেতু, চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেললাইন, কর্ণফুলী টানেল, ঢাকা মাওয়া যশোর রেললাইন। এমন কিছু প্রকল্পকে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিসিয়েটিভ বা বিআরআই প্রকল্পের অংশ হিসেবেই দাবি করে চীন।

গত ২০ আগস্ট অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছিলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের কাছে চীনের চার বিলিয়ন ডলার পাওনা আছে। আর বিভিন্ন প্রকল্পে বাংলাদেশকে আরও ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। অর্থাত, বাংলাদেশে চীনা ঋণের পরিমাণ বাড়ছে দিন দিন। বাংলাদেশকে ঋণ দেয়, এমন ৩২টি দেশ ও সংস্থার মধ্যে চীন এখন চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
চীনের ওপরে আছে বিশ্বব্যাংক, জাপান ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক- এডিবি। আর বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থাগুলো থেকে প্রতিবছর মোট যে পরিমাণ ঋণ নেয়, তার প্রায় ১০ শতাংশই দেয় চীন। এমনকি, দেশটি টানা দুই বছর বাংলাদেশকে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার বা তার চেয়ে বেশি পরিমাণে ঋণ দিয়েছে।
এখন পর্যন্ত চীনের কাছ থেকে বাংলাদেশ যত ঋণ দিয়েছে, তার মধ্যে গত চার বছরেই নিয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি ডলার। এই অর্থ চীনের দেওয়া মোট ঋণের ৪০ শতাংশের মতো। যদিও চীনা ঋণের সুদের হার অন্যান্য দেশ ও সংস্থাগুলোর দেয়া ঋণের সুদের হারের প্রায় সমান। তারপরও চীনের কাছ থেকে প্রতিবছর নেয়া ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। অবশ্য দু’দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যও বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত।
চীনের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়লেও তা অনেকটা একতরফা ভাবেই বলা যায়। কারণ চীন থেকে বাংলাদেশের আমদানি বাড়ছে প্রতিবছরই। সেই তুলনায় বাড়ছে না রপ্তানি। ফলে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েই চলছে।
আর গত এক দশকে এই বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি। বাংলাদেশের মোট আমদানির ২৬ শতাংশই আসি চীন থেকে। যদিও মোট রপ্তানির মাত্র ১২২ শতাংশ যায় দেশটিতে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ইপিবির পরিসংখ্যানে দেখা যায়। ২০১২-১৩ অর্থবছরে চীন থেকে ৬৩২ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করা হয়েছিল। বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৪৬ কোটি ডলারের পণ্য। অর্থাৎ মানিক্য ঘাটতি ৫৮৫ কোটি ডলার।
এর এক দশক পর ২০২১-২২ অর্থবছরে, চীন থেকে আমদানি করা হয়েছে ১৯৩৫ কোটি ডলারের পণ্য। অথচ এই সময়ে দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়ার পণ্যের অর্থ মূল্য ছিল মাত্র ৬৮ কোটি ডলার। সর্বশেষ ২০২২ ২৩ অর্থবছরে চীন থেকে আমদানি কিছুটা বেড়েছে। পণ্য আমদানি হয়েছে ১,৯৮১ কোটি ডলারের। তবে রপ্তানি ছিল সেই ৬৮ কোটি ডলার।

এই হিসেবে চীনের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ১৯০০ কোটি ডলারের বেশি। অর্থাৎ এক দশকে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে, সয়াবিন তেল ও পামওয়েল, গম, প্রকৌশল যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ, তুলা, ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ, বোনা কাপড়, কৃত্রিম তন্তু ইত্যাদি।

বাংলাদেশের পোশাক তরে বেশিরভাগ কাঁচামালও আসে চীন থেকে। আর বাংলাদেশ থেকে চিনে রপ্তানি হওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে, ওভেন পোশাক, নিট ওয়ার, চামড়া ও চামড়া জাত পণ্য জুতা ইত্যাদি। বলা যায় এককভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এখন চীন। শুধু তাই না, বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার বাড়ার সাথে-সাথে, চীন থেকে আমদানির পরিমাণও বাড়তে থাকবে। কারণ যেসব পণ্য বাংলাদেশ রপ্তানি করছে, সেগুলোর যন্ত্রাংশ, কেমিক্যাল থেকে শুরু করে, প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানি করতে হচ্ছে চীন থেকে।

এমনকি যেসব পণ্য নতুন করে রপ্তানির তালিকায় যুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে। সেগুলোর কাঁচামাল বা যন্ত্রাংশের জন্য চীনের মুখাপেক্ষী হতে হবে। ফলে বলা যায় বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশে চীনের কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশের প্রধান খাত গুলোকে তাদের প্রয়োজনে আমদানি করতে হয় চীন থেকে। যে কারণে এটা বলার প্রয়োজন রাখে না যে। বাংলাদেশের অর্থনীতি যত বড় হবে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ততো বাড়তে থাকবে।

এদিকে ২০১৫ সালে চীন কয়েকটি স্বল্পনাতো দেশে। তাদের পণ্যের ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত বাণিজ্য সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। ২০২০ সালের জুলাই থেকে চারিফ লাইনের আওতায় ৯৭ শতাংশ বাংলাদেশী পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চালু করে। ফলে ওই বছর চীনে ৮৫৪৭টি পণ্য সুবিধায় রপ্তানির সুযোগ পায় বাংলাদেশ। আর ২০২২ সালেই চিন তার বাজারে, বাংলাদেশকে ৯৯ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়। যদিও এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে চীনের বাজারে রপ্তানি বাড়াতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ।।

এদিকে ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশ স্বল্পোনত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নত হলে। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানির সময় শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। চিনও এর ব্যতিক্রম নয়।।

তবে ২০২৬ সালের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশ বের হওয়ার আগেই। চীনের সাথে এফটিএ বা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে। এই চুক্তি হলে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে, বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
২০১৮ সালে বাংলাদেশে ১ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছিল। চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে। কিন্তু ২০১৯ সালেই তা কমে যায়। ওই বছর বিনিয়োগ আসে ৬২৬ মিলিয়ন ডলার।

করোনা মহামারীর সময় অর্থাৎ ২০২০ সালেই তা আরো কমে মাত্র ৫১ মিলিয়ন ডলারের নেমে আসে। অবশ্য ২০২১ সালে এই অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। ওই বছর চীন থেকে বিনিয়োগ আসে ৪০৮ মিলিয়ন ডলার। পরবর্তী বছরগুলোতে, বিনিয়োগের পরিমাণ আরো বাড়ার আশা করা হলেও, ২০২২ সালে চীনা বিনিয়োগ কমে ১৮৭ মিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ কিছুটা বেরে ২৬০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী। স্বাধীনতার পর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত। দেশের বিভিন্ন খাতে ঋণ ও অনুদান হিসেবে মোট ১ হাজার ৭৭ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল চীন। তবে এর মধ্যে অনুদান হিসেবে এসেছে খুব সামান্যই। সিংহভাগই দেয়া হয়েছে ঋণ হিসেবে।

বাংলাদেশে গত এক দশক ধরে, বড়-বড় বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে দেখা গেছে। কোন প্রকল্পের বাস্তবায়ন শেষ কোনটা শেষের পথে। এমন কিছু প্রকল্প হলো পদ্মা সেতু, পদ্মা রেল, কর্ণফুলী টানেল, চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেললাইন, পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পদ্মা পানি শোধনাগার প্রকল্প, তথ্যপ্রযুক্তি অবঘন ও ডিজিটাল সরকার প্রকল্প ইত্যাদি। এসব প্রকল্পের অনেকগুলোর সাথে রয়েছে চীনের গভীর সম্পৃক্ততা। বিদ্যুৎ, জ্বালানি সহ দেশের বিভিন্ন খাতে। সরকারি, বেসরকারিভাবে বাস্তবায়নাধীন। এমন আরো বেশ কিছু মেগা প্রকল্পে এখন বিনিয়োগ রয়েছে চীনের। পদ্মা সেতু, চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেললাইন, কর্ণফুলী টানেল, ঢাকা মাওয়া যশোর রেললাইন। এমন কিছু প্রকল্পকে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিসিয়েটিভ বা বিআরআই প্রকল্পের অংশ হিসেবেই দাবি করে চীন।

লেখক থেকে আরো

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Advertismentspot_img

সাম্প্রতিক সংবাদ

আরও কত বছর চাপে থাকবে বাংলাদেশের অর্থনীতি?

বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও এক বছর চাপে থাকবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন জিডিপি কমে ৪ শতাংশ হবে। তবে...

ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে কেন?

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, টাকার মান কমে যাওয়ার পেছেনে বেশ কিছু...

প্যারিসে গাড়ির প্রদর্শনীতে চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির আধিপত্য

চীনা পণ্য আমদানিকে নিরুৎসাহিত করতে বরাবরই শুল্ক আরোপের চর্চা অব্যাহত রেখেছে পশ্চিমা বিশ্ব। এই ধারাবাহিকতায় চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানিতে আগামী পাঁচ বছরে শুল্ক ১০...

সর্বশেষ খবরের সাথে আপ টু ডেট থাকতে চান?

আমরা আপনার কাছ থেকে শুনতে চাই! আপনার বিবরণ পূরণ করুন এবং আমরা আমাদের সকল আপডেট আপনাকে জানাবো।