কেন জাফরান বিশ্বের সবচেয়ে দামি মসলা?

খাবার কি সুস্বাদু করতে মসলার জুরি নেই। তবে একটা সময় ছিল যখন স্বর্ণের দামের চেয়ে বেশি দাম ছিল মসলার। তবে বাণিজ্যের সহজিকরণের সঙ্গে সঙ্গে মসলার দাম মানুষের নাগালের মধ্যে চলে আসে কিন্তু এখনো কিছু মসলার দাম আকাশচুম্বি। এমনকি সেসব মসলার এক কেজির দামে একটি ছোটখাটো গাড়ি ও কেনা সম্ভব। বলছি পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মসলা সেফরন বা জাফরানের কথা।
প্রতি কেজি জাফরানের বাজার মূল্য প্রায় ৬ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এটি রাজকীয় খাবার বিশেষ করে বিরিয়ানি ডেজার্ট সুগন্ধি এবং প্রসাধনীতে ব্যবহারের জন্য বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। রোগ নিরাময়ে এর বিশেষ গুনাগুন রয়েছে। তবে এর আকাশচুমি দাম নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই।
প্রাচীনকালের সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে জাফরানের। বলা হয়ে থাকে এটি সর্বপ্রথম চাষ হয়েছিল গ্রিসে। পরে পারস্য এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অংশে প্রবর্তিত হয়। প্রাচীন রোমে এটি অত্যন্ত মূল্যবান ছিল এবং ঔষধ থেকে প্রসাধনীর সবকিছুতে ব্যবহৃত হতো। মধ্যযুগে জাফরান ইউরোপে একটি প্রধান পণ্য হয়ে উঠে এবং সিল্ক রোড দিয়ে শুরু হয় এর ব্যবসা। ঐতিহাসিক বাণিজ্যিক এই পথ দিয়ে ইরান স্পেইন এবং ভারতে জাফরানের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়ে।
প্রাচীন গিরিকরা জাফরান ব্যবহার করত এর রং ও সুগন্ধির জন্য। প্রাচীন গ্রিসের জনসংখ্যার অধিকাংশেরই কালো চুল ছিল তবে তাদের চুলেরও পছন্দের রং ছিল সোনালী। সেজন্য হলুদ রং ব্যবহার করত তারা আর এই রং জাফরান এবং পটাশিয়াম জলের মিশ্রণে তৈরি হতো। গ্রিসে জাফরান ফসলের বিচিত্র ছবি ও পাওয়া গেছে যা খ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ থেকে ১৫০০ শতাব্দীর।
তিন হাজার বছর আগে ইহুদিদের কাছে জাফরান সুগন্ধী হিসেবে ব্যবহার হতো। দেবতাদের পূজায় জাফরান ব্যবহার করা হতো। মিসরের রানি ক্লিওপেট্রা তার গোসলের পানিতে জাফরান ব্যবহার করতেন । যার কারনে আরও বেশি জনপ্রিয়তা পায় ।

ইতালি, ইরান আর স্পেন বিশ্বের সর্ববৃহৎ জাফরান উৎপাদনকারী দেশ হলেও ইরান একাই বিশ্বজুড়ে জাফরানের ৯০ শতাংশের জোগান দেয়। ইরান ছাড়াও মরক্কো, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, আফগানিস্তান, ভারত, এমনকি আমেরিকার কিছু এলাকাতেও জাফরানের চাষ হয়।

গবেষকরা দাবি করেন, এই জাফরান আলঝেইমার রোগে, ডিপ্রেশনে, প্রিমিন্সট্রুয়াল সিনড্রোম সমস্যা রোধেও সহায়ক। জাফরান কফ, কাশি, ঠাণ্ডা, পাকস্থলীর সমস্যা, অনিদ্রা, গর্ভাশয়ে রক্তপাত, পেটফাঁপা ও হৃদরোগের সমস্যা সমাধানে বেশ ভালো কাজ করে। জাফরানে থাকা ম্যাংগানিজ ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে এবং হাড় ও টিস্যু গঠনে, ভিটামিন-সি যেকোনো ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং আয়রন শোষণে সাহায্য করে। দুধের সঙ্গে জাফরান মিশিয়ে খেলে হজমশক্তি ও রুচি বাড়ে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখে। রাতে ঘুমানোর আগে জাফরান দুধ খেলে খুব ভালো ঘুম হয়। জাফরানে যে প্রাকৃতিক যৌগ আছে তা দৃষ্টিশক্তির অবক্ষয় এবং রেটিনার যেকোনো সমস্যা প্রতিরোধ করে।

জাফরানের অন্য একটি নাম কেশর। একে ইংরেজিতে বলে স্যাফরন। জাফরানের মূল্য অনেক বেশি। এ কারণে বাণিজ্যিক অঙ্গনে এর নাম লাল সোনা বা রেড গোল্ড। এর মূল কারণ এটির চাষ ও সংগ্রহ পদ্ধতি। জাফরান সংগ্রহের পুরো পদ্ধতিটাই হাতে হাতে করতে হয়। আর এটি বেশ সময়সাপেক্ষও বটে। মাত্র ১ পাউন্ড বা ৪৫৩ গ্রাম জাফরান পেতে প্রয়োজন ১ লাখ ৭০ হাজার ফুল। ১ পাউন্ড জাফরান সংগ্রহ করতে শ্রমিকদের ৪০ ঘণ্টা সময় লাগে। প্রতি কেজি জাফরানের বাজার মূল্য প্রায় ৬ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে

খাবার কি সুস্বাদু করতে মসলার জুরি নেই। তবে একটা সময় ছিল যখন স্বর্ণের দামের চেয়ে বেশি দাম ছিল মসলার। তবে বাণিজ্যের সহজিকরণের সঙ্গে সঙ্গে মসলার দাম মানুষের নাগালের মধ্যে চলে আসে কিন্তু এখনো কিছু মসলার দাম আকাশচুম্বি। এমনকি সেসব মসলার এক কেজির দামে একটি ছোটখাটো গাড়ি ও কেনা সম্ভব। বলছি পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মসলা সেফরন বা জাফরানের কথা।
প্রতি কেজি জাফরানের বাজার মূল্য প্রায় ৬ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এটি রাজকীয় খাবার বিশেষ করে বিরিয়ানি ডেজার্ট সুগন্ধি এবং প্রসাধনীতে ব্যবহারের জন্য বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। রোগ নিরাময়ে এর বিশেষ গুনাগুন রয়েছে। তবে এর আকাশচুমি দাম নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই।
প্রাচীনকালের সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে জাফরানের। বলা হয়ে থাকে এটি সর্বপ্রথম চাষ হয়েছিল গ্রিসে। পরে পারস্য এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অংশে প্রবর্তিত হয়। প্রাচীন রোমে এটি অত্যন্ত মূল্যবান ছিল এবং ঔষধ থেকে প্রসাধনীর সবকিছুতে ব্যবহৃত হতো। মধ্যযুগে জাফরান ইউরোপে একটি প্রধান পণ্য হয়ে উঠে এবং সিল্ক রোড দিয়ে শুরু হয় এর ব্যবসা। ঐতিহাসিক বাণিজ্যিক এই পথ দিয়ে ইরান স্পেইন এবং ভারতে জাফরানের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়ে।
প্রাচীন গিরিকরা জাফরান ব্যবহার করত এর রং ও সুগন্ধির জন্য। প্রাচীন গ্রিসের জনসংখ্যার অধিকাংশেরই কালো চুল ছিল তবে তাদের চুলেরও পছন্দের রং ছিল সোনালী। সেজন্য হলুদ রং ব্যবহার করত তারা আর এই রং জাফরান এবং পটাশিয়াম জলের মিশ্রণে তৈরি হতো। গ্রিসে জাফরান ফসলের বিচিত্র ছবি ও পাওয়া গেছে যা খ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ থেকে ১৫০০ শতাব্দীর।
তিন হাজার বছর আগে ইহুদিদের কাছে জাফরান সুগন্ধী হিসেবে ব্যবহার হতো। দেবতাদের পূজায় জাফরান ব্যবহার করা হতো। মিসরের রানি ক্লিওপেট্রা তার গোসলের পানিতে জাফরান ব্যবহার করতেন । যার কারনে আরও বেশি জনপ্রিয়তা পায় ।

ইতালি, ইরান আর স্পেন বিশ্বের সর্ববৃহৎ জাফরান উৎপাদনকারী দেশ হলেও ইরান একাই বিশ্বজুড়ে জাফরানের ৯০ শতাংশের জোগান দেয়। ইরান ছাড়াও মরক্কো, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, আফগানিস্তান, ভারত, এমনকি আমেরিকার কিছু এলাকাতেও জাফরানের চাষ হয়।

গবেষকরা দাবি করেন, এই জাফরান আলঝেইমার রোগে, ডিপ্রেশনে, প্রিমিন্সট্রুয়াল সিনড্রোম সমস্যা রোধেও সহায়ক। জাফরান কফ, কাশি, ঠাণ্ডা, পাকস্থলীর সমস্যা, অনিদ্রা, গর্ভাশয়ে রক্তপাত, পেটফাঁপা ও হৃদরোগের সমস্যা সমাধানে বেশ ভালো কাজ করে। জাফরানে থাকা ম্যাংগানিজ ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে এবং হাড় ও টিস্যু গঠনে, ভিটামিন-সি যেকোনো ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং আয়রন শোষণে সাহায্য করে। দুধের সঙ্গে জাফরান মিশিয়ে খেলে হজমশক্তি ও রুচি বাড়ে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখে। রাতে ঘুমানোর আগে জাফরান দুধ খেলে খুব ভালো ঘুম হয়। জাফরানে যে প্রাকৃতিক যৌগ আছে তা দৃষ্টিশক্তির অবক্ষয় এবং রেটিনার যেকোনো সমস্যা প্রতিরোধ করে।

জাফরানের অন্য একটি নাম কেশর। একে ইংরেজিতে বলে স্যাফরন। জাফরানের মূল্য অনেক বেশি। এ কারণে বাণিজ্যিক অঙ্গনে এর নাম লাল সোনা বা রেড গোল্ড। এর মূল কারণ এটির চাষ ও সংগ্রহ পদ্ধতি। জাফরান সংগ্রহের পুরো পদ্ধতিটাই হাতে হাতে করতে হয়। আর এটি বেশ সময়সাপেক্ষও বটে। মাত্র ১ পাউন্ড বা ৪৫৩ গ্রাম জাফরান পেতে প্রয়োজন ১ লাখ ৭০ হাজার ফুল। ১ পাউন্ড জাফরান সংগ্রহ করতে শ্রমিকদের ৪০ ঘণ্টা সময় লাগে। প্রতি কেজি জাফরানের বাজার মূল্য প্রায় ৬ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে

লেখক থেকে আরো

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Advertismentspot_img

সাম্প্রতিক সংবাদ

নিষেধাজ্ঞা মেনে চীনের জন্য নতুন চিপ তৈরি করছে এনভিডিয়া

মার্কিন রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার পর আবারও চীনে রপ্তানির জন্য বিশেষভাবে নতুন চিপ ডিজাইন করতে শুরু করছে যুক্তরাষ্ট্রের চিপ নির্মাতা কোম্পানি এনভিডিয়া।এনভিডিয়া জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা...

বিশ্বের শীর্ষ ধনী পরিবার সাড়ে ৫২ লাখ কোটি টাকার মালিক

বিশ্বের ধনীতম পরিবার ৪৩২ ‍বিলিয়ন ডলারের মালিক। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৫২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।বাংলাদেশের সর্বশেষ বাজেটের সাড়ে ছয় গুণ! আর এ...

আমেরিকার জনসংখ্যার চেয়েও বেশি মানুষ ব্যবহার করেন এই অ্যাপটি!

আমেরিকার মোট জনসংখ্যা বর্তমানে ৩৪ কোটি। অথচ একটি অ্যাপের মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা তার চেয়েও ১ কোটি বেশি, অর্থাৎ ৩৫ কোটি। বলা হচ্ছে গুগলের...

সর্বশেষ খবরের সাথে আপ টু ডেট থাকতে চান?

আমরা আপনার কাছ থেকে শুনতে চাই! আপনার বিবরণ পূরণ করুন এবং আমরা আমাদের সকল আপডেট আপনাকে জানাবো।