একটা সময় ছিল যখন ভিডিও কলিং মানেই ছিল স্কাইপ। সীমান্তের ওপারে থাকা প্রিয়জনের মুখ দেখা কিংবা অফিসের গুরুত্বপূর্ণ মিটিং—সবকিছুর ভরসা ছিল এই একটি অ্যাপ।
গেল ৫ মে শেষবারের মতো বেজে উঠবে উঠেছিল স্কাইপ। এরপর চিরতরে অকেজো হয়ে যাওয়া দুই দশকেরও বেশি সময়ের জনপ্রিয় এ ভিডিও কনফারেন্স প্ল্যাটফর্মটি। ঠাঁই এখন কেবল প্রযুক্তি ইতিহাসের পাতায়।
স্কাইপের প্রযুক্তি স্মার্টফোন যুগের জন্য উপযুক্ত না হওয়াই মূলত পতনের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন টেক বিশেষজ্ঞরা। যা করোনা মহামারির সময় হারে হারে টের পায় মাইক্রোসফট। যখন ঘরে বসে কাজ করার মাধ্যমে অনলাইনে ব্যবসা ও যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়। স্কাইপের সীমাবদ্ধতায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠে জুম, গুগল মিট, হোয়াটসঅ্যাপের মতো অ্যাপগুলো।
স্মার্টফোন যুগের সাথে তাল মেলাতে না পারা ছাড়াও মাইক্রোসফটের বেশ কিছু উচ্চাকাঙ্ক্ষী পদক্ষেপে স্কাইপের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এর মধ্যে রয়েছে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ওয়েব ব্রাউজার এবং উইন্ডোজ ফোনের মতো মাইক্রোসফটের বেশ কিছু প্রজেক্টে মনোনিবেশ। এসব করতে গিয়ে স্কাইপে মনোযোগ হারায় প্রতিষ্ঠানটি। অন্যান্য অত্যাধুনিক ভিডিও কনফারেন্স প্ল্যাটফর্মের ভিড়ে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা হারায় স্কাইপ।
অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে আর কোনো উপায় না পেয়ে স্কাইপ সেবা পুরোপুরি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় মাইক্রোসফট। ২০১১ সালে এর মালিকানা নেয়ার পর প্রতিদিন ৩ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ স্কাইপ ব্যবহার করেন বলে দাবি করে মাইক্রোসফট। যদিও, বন্ধের আগে স্কাইপের সবশেষ ব্যবহারকারীর পরিসংখ্যান জানাতে চায় না টেক জায়ান্টটি।
২০০৩ সালে স্কাইপের যাত্রা শুরু। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এটি বিশ্বের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সেসময়, ইন্টারনেটের গতি ধীর হলেও স্কাইপ ভিডিও ও ভয়েস কলের মাধ্যমে বিপ্লব ঘটায় প্ল্যাটফর্মটি। অবশেষে স্মৃতিভরা ২৪ বছর পর ডিজিটাল সংযোগের এক বৈপ্লবিক অধ্যায়ে পরিসমাপ্তি ঘটলো