ফাঁকা আকাশ সব সময় দেখতে দৃষ্টিনন্দন নাও হতে পারে। ভারতের বিমানগুলোর পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসলামাবাদ। উল্টোদিকে, ইউরোপের বড় এয়ারলাইন্সগুলো নিজেই এড়িয়ে চলছে পাকিস্তানের আকাশসীমা। আন্তর্জাতিক আকাশ পরিবহন সংস্থা বলছে, এতে করে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে খোদ পাকিস্তান।
এতদিন ইউরোপ আর উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে যেতে এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো আর স্পাইস জেটের মতো ভারতীয় এয়ারলাইন্সগুলো ব্যবহার করতো পাকিস্তানের আকাশসীমা। সেই সুবাদে খুব অল্প সময়ে পৌঁছে যাওয়া যেত গন্তব্যে। পেহেলগামে পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ভারতের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান। এতে বিমানগুলোকে অন্যান্য সময়ের তুলনায় কয়েক ঘণ্টা বেশি লাগছে গন্তব্যে পৌঁছাতে। প্রয়োজন পড়ছে অতিরিক্ত জ্বালানির। মাঝে মধ্যেই পাড়ি দিতে হচ্ছে আরব সাগর।
ভারতের সিভিল অ্যাভিয়েশন বলছে, পাকিস্তানের আকাশসীমা এক বছর বন্ধ থাকলে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট পরিচালনায় বাড়তি খরচ পড়বে ৬০ কোটি ডলার। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বিজনেস স্ট্যাডার্ড জানায়, দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহরগুলো থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনায় ভারতীয় এয়ারলাইন্সগুলোর সপ্তাহে বাড়তি খরচ পড়বে ৭৭ কোটি রুপি। যদি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয় আর বাড়তি জ্বালানির ব্যবহার হয়, মাসে সেই খরচ ছাড়াবে ৩০০ কোটি রুপির ওপরে।
অন্যদিকে, নিরাপত্তা ইস্যুতে পাকিস্তানের আকাশসীমা দিয়ে উড্ডয়ন বন্ধ করেছে এয়ার ফ্রান্স, লুফথানসার মতো বিশ্বখ্যাত এয়ারলাইন্সগুলো। এয়ার ফ্রান্স জানিয়েছে, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে টানাপড়েনের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির আকাশসীমা পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ব্যবহার করা হবে না। তবে এই কারণে বেড়ে যাবে ফ্লাইটের সময় ও খরচ।
জার্মানির লুফথানসা কর্তৃপক্ষ জানায়, সময় বাড়লেও আপাতত বন্ধ থাকছে পাকিস্তানের আকাশসীমা দিয়ে উড্ডয়ন।
পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলছে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, সুইস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স ও এমিরেটস এয়ারলাইন্সই। আরব সাগর দিয়ে এই এয়ারলাইন্সের বিমানগুলোকে পাড়ি দিতে হচ্ছে লম্বা পথ। মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার কারণে কিছুদিন ইউরোপ আর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যারিয়ারগুলোও এড়িয়ে চলেছে এই অঞ্চলের আকাশসীমা। কোনো এয়ারলাইন্স পাক আকাশসীমা ব্যবহার না করায় শত কোটি ডলার লোকসানের মুখে পড়বে পাকিস্তানও। দেশটির রিজার্ভ রয়েছে মাত্র এক হাজার কোটি ডলার। যা দিয়ে দুই মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব