চলমান থাকবে চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ
২০১৮ সাল থেকে আমদানি পণ্যে শুল্কারোপ-পাল্টা শুল্কারোপের মধ্য দিয়ে চলছে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ। নির্বাচনি বছরেও চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, সোলার প্যানেল আর সেমিকন্ডাক্টর আমদানিতে ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের শুল্কারোপ করেছে বাইডেন প্রশাসন। এই শুল্ক বাড়ানোর আওতায় রয়েছে ১৪টি পণ্য।
বাণিজ্য যুদ্ধের শুরুটা ট্রাম্প প্রশাসন করলেও তা অব্যাহত রেখেছেন বাইডেন প্রশাসন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আবারও আলোচনা উঠে এসেছে, মার্কিন নেতৃত্বের পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যিক সম্পর্কের ভাগ্য ফিরবে কিনা। কিন্তু সেই সম্ভাবনাকে গুড়িয়ে দিয়ে চীনা পণ্যে শতভাগ শুল্কারোপের প্রস্তাব দিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সঙ্গে বলেছেন, সকল আমদানি পণ্যে আরোপ করা হবে ১০ থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক।
অন্যদিকে, নির্বাচনি বিতর্কে চীন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে কামালা হ্যারিসের ছিল না সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য। যদিও কামালা বলেন, চীনকে স্বীকার করতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র ২১ শতকের প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছে। তবে, বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক দ্বন্দ্ব চলতেই থাকবে। আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যেই জয়ী হোক না কেন চীনের বিপক্ষে সিদ্ধান্ত আসতেই থাকবে।
অর্থনীতিবিদ কালোর্স কাসানোভা বলেন, ‘ইউরোপ আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অস্থিরতা চলমান থাকবে। চীনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবেই। আরও শুল্কারোপের প্রয়োজন পড়বে, কারণ চীনের রপ্তানি অনেক বেড়ে গেছে ইউরোপে। কোনো বিষয় না, কে জিতলো নির্বাচনে। তবে চীন আসিয়ানে বিকল্প বাজার খুঁজবে। নিজেদের অতিরিক্ত পণ্য সেখানে বিক্রি করবে।’
এর আগেই চীনের অতি সক্ষমতা নিয়ে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গেলো মে মাসে অর্থসচিব জেনেট ইয়েলেন বলেছেন, চীনের অতিরিক্ত শিল্প উৎপাদন ক্ষমতা ইউরোপ আর যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পখাতের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশের শিল্প উৎপাদনকে হুমকিতে ফেলছে। এর আগেও বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত পণ্য উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি পণ্য বিভিন্ন দেশে ডাম্পিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি ইউরোপ আর যুক্তরাষ্ট্রের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিপাকে ফেলতে দেশের ইভি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভর্তুকি দেয়ারও অভিযোগ আছে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজেদের অতিরিক্ত উৎপাদন না কমিয়ে চীন এখন বিকল্প বাজার খুঁজবে এশিয়াতে। কিন্তু এশিয়ার অনেক দেশে আর্থিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল না থাকায় উন্নত দেশ ছেড়ে নতুন বাজার ধরাটাকে বেশ কঠিন হিসেবেই দেখছেন তারা