দেশে প্রতি বছর জ্বালানি আমদানি করতে হয় অন্তত ১৩ বিলিয়ন ডলারের। এর অর্ধেকের কাছাকাছি বা ৬ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানির প্রয়োজন পড়ে শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনে। সামনের দিনগুলোয় এ ব্যয় আরো বাড়ার পূর্বাভাস রয়েছে। যদিও এজন্য প্রয়োজনীয় ডলারের সংস্থান করা যাচ্ছে না। প্রয়োজনমতো কয়লা, এলএনজি ও ফার্নেস অয়েল আমদানি করতে না পারায় ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে সারা দেশে। শিল্প-কারখানাসহ বিভিন্ন খাতেও এর প্রভাব বাড়ছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে খাতটির পরিকল্পনাগুলো আবর্তিত হয়েছে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোকে কেন্দ্র করে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, দেশে গ্যাস, কয়লা, ফার্নেস অয়েল, ডিজেল ও এলএনজি-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মোট সক্ষমতা এখন ২৫ হাজার ৭৩৮ মেগাওয়াট। এর সিংহভাগই তৈরি হয়েছে গত দেড় দশকে।
উৎপাদন সক্ষমতায় জোর দেয়া হলেও উপেক্ষিত থেকেছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর প্রয়োজনীয় জ্বালানি সংস্থানের বিষয়টি। কিন্তু এসব কেন্দ্র চালানোর জন্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ, পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ ও অবকাঠামো সক্ষমতা গড়ে তোলা যায়নি। মহাপরিকল্পনাগুলো সাজানো হয়েছে আমদানীকৃত জ্বালানির ওপর ভিত্তি করে।
দেশে জাতীয় গ্রিডে মোট গ্যাস সরবরাহের এক-তৃতীয়াংশই আসে আমদানীকৃত এলএনজির মাধ্যমে। কিন্তু এলএনজি সরবরাহের জন্য দুটি টার্মিনালের একটি দুর্ঘটনার কারণে বন্ধ ছিল সাড়ে তিন মাস। এ সময় দেশে গ্যাসের সংকট তীব্র হয়ে দেখা দেয়। বর্তমানে দুটি টার্মিনাল সচল থাকলেও এখনই পূর্ণ সক্ষমতায় এলএনজি দেয়া যাচ্ছে না।
দেশে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সক্ষমতা সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি। যদিও সর্বোচ্চ সাড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে। পেট্রোবাংলার হিসাব অনুযায়ী, দেশে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পূর্ণ সক্ষমতায় চালাতে হলে প্রতিদিন ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন। তবে কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণ, অদক্ষ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হিসাব বাদ দিলে গ্যাস প্রয়োজন অন্তত ১ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো এখন দিনে গ্যাস পাচ্ছে গড়ে সাড়ে ৮০০ থেকে ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাস না থাকায় বাকি কেন্দ্রগুলো অলস বসিয়ে রাখতে হচ্ছে বিপিডিবিকে।
দেশে জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে ৬ হাজার ১৭৫ মেগাওয়াট সক্ষমতার। এর ফার্নেস অয়েলভিত্তিক কেন্দ্রের সক্ষমতা ৫ হাজার ৮৮৫ মেগাওয়াট। ডিজেলভিত্তিকের সক্ষমতা ২৯০ মেগাওয়াট। এসব কেন্দ্র থেকে এখন দিনে এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে। বাকিটুকু অলস বসিয়ে রাখতে হচ্ছে। এ ধরনের কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ অন্যগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। আমদানীকৃত বিদ্যুৎকে হিসাবে না নিলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা ৭ হাজার ১৭৯ মেগাওয়াট।
প্রাথমিক জ্বালানি আমদানিতে সৃষ্ট এ সংকট অনুধাবন করতে পারছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংশ্লিষ্টরাও। এরই মধ্যে জ্বালানি আমদানিতে অর্থ সংস্থানের জন্য বাজেট সহায়তা হিসেবে বিশ্বব্যাংকের কাছে ১ বিলিয়ন ডলার চাওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে দেয়া এক চিঠিতে দুই কিস্তিতে ৫০ কোটি ডলার করে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ইআরডি।
দেশে বিদ্যুৎ খাতে প্রাথমিক জ্বালানি আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে নির্ভরতা কমানোর সুযোগ রয়েছে। এজন্য স্থানীয় গ্যাস ও কয়লার উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। সেই সঙ্গে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। আমদানিনির্ভরতা অতিমাত্রায় বেড়ে গেলে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে। এ চাপ কমাতে গ্রিডে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ সক্ষমতা তৈরি হয়েছে, তার যৌক্তিক ব্যবহার করতে হবে।’
দেশে প্রতি বছর জ্বালানি আমদানি করতে হয় অন্তত ১৩ বিলিয়ন ডলারের। এর অর্ধেকের কাছাকাছি বা ৬ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানির প্রয়োজন পড়ে শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনে। সামনের দিনগুলোয় এ ব্যয় আরো বাড়ার পূর্বাভাস রয়েছে। যদিও এজন্য প্রয়োজনীয় ডলারের সংস্থান করা যাচ্ছে না। প্রয়োজনমতো কয়লা, এলএনজি ও ফার্নেস অয়েল আমদানি করতে না পারায় ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে সারা দেশে। শিল্প-কারখানাসহ বিভিন্ন খাতেও এর প্রভাব বাড়ছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে খাতটির পরিকল্পনাগুলো আবর্তিত হয়েছে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোকে কেন্দ্র করে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, দেশে গ্যাস, কয়লা, ফার্নেস অয়েল, ডিজেল ও এলএনজি-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মোট সক্ষমতা এখন ২৫ হাজার ৭৩৮ মেগাওয়াট। এর সিংহভাগই তৈরি হয়েছে গত দেড় দশকে।
উৎপাদন সক্ষমতায় জোর দেয়া হলেও উপেক্ষিত থেকেছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর প্রয়োজনীয় জ্বালানি সংস্থানের বিষয়টি। কিন্তু এসব কেন্দ্র চালানোর জন্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ, পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ ও অবকাঠামো সক্ষমতা গড়ে তোলা যায়নি। মহাপরিকল্পনাগুলো সাজানো হয়েছে আমদানীকৃত জ্বালানির ওপর ভিত্তি করে।
দেশে জাতীয় গ্রিডে মোট গ্যাস সরবরাহের এক-তৃতীয়াংশই আসে আমদানীকৃত এলএনজির মাধ্যমে। কিন্তু এলএনজি সরবরাহের জন্য দুটি টার্মিনালের একটি দুর্ঘটনার কারণে বন্ধ ছিল সাড়ে তিন মাস। এ সময় দেশে গ্যাসের সংকট তীব্র হয়ে দেখা দেয়। বর্তমানে দুটি টার্মিনাল সচল থাকলেও এখনই পূর্ণ সক্ষমতায় এলএনজি দেয়া যাচ্ছে না।
দেশে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সক্ষমতা সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি। যদিও সর্বোচ্চ সাড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে। পেট্রোবাংলার হিসাব অনুযায়ী, দেশে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পূর্ণ সক্ষমতায় চালাতে হলে প্রতিদিন ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন। তবে কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণ, অদক্ষ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হিসাব বাদ দিলে গ্যাস প্রয়োজন অন্তত ১ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো এখন দিনে গ্যাস পাচ্ছে গড়ে সাড়ে ৮০০ থেকে ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাস না থাকায় বাকি কেন্দ্রগুলো অলস বসিয়ে রাখতে হচ্ছে বিপিডিবিকে।
দেশে জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে ৬ হাজার ১৭৫ মেগাওয়াট সক্ষমতার। এর ফার্নেস অয়েলভিত্তিক কেন্দ্রের সক্ষমতা ৫ হাজার ৮৮৫ মেগাওয়াট। ডিজেলভিত্তিকের সক্ষমতা ২৯০ মেগাওয়াট। এসব কেন্দ্র থেকে এখন দিনে এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে। বাকিটুকু অলস বসিয়ে রাখতে হচ্ছে। এ ধরনের কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ অন্যগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। আমদানীকৃত বিদ্যুৎকে হিসাবে না নিলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা ৭ হাজার ১৭৯ মেগাওয়াট।
প্রাথমিক জ্বালানি আমদানিতে সৃষ্ট এ সংকট অনুধাবন করতে পারছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংশ্লিষ্টরাও। এরই মধ্যে জ্বালানি আমদানিতে অর্থ সংস্থানের জন্য বাজেট সহায়তা হিসেবে বিশ্বব্যাংকের কাছে ১ বিলিয়ন ডলার চাওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে দেয়া এক চিঠিতে দুই কিস্তিতে ৫০ কোটি ডলার করে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ইআরডি।
দেশে বিদ্যুৎ খাতে প্রাথমিক জ্বালানি আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে নির্ভরতা কমানোর সুযোগ রয়েছে। এজন্য স্থানীয় গ্যাস ও কয়লার উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। সেই সঙ্গে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। আমদানিনির্ভরতা অতিমাত্রায় বেড়ে গেলে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে। এ চাপ কমাতে গ্রিডে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ সক্ষমতা তৈরি হয়েছে, তার যৌক্তিক ব্যবহার করতে হবে।’